ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

সভাপতি পদে পুনরায় নির্বাচন দাবি

চকরিয়া চিরিঙ্গা সমিতির নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  চকরিয়া উপজেলার প্রাচীনতম সমবায় প্রতিষ্ঠান চিরিঙ্গা ইউনিয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির লিমিটেডের (রেজি: ২৪ (চ) অনুষ্ঠিত ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি পদে ঘোষিত ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। সভাপতি পদে মাত্র ২ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম হওয়া প্রার্থী ও চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিব সংবাদ সম্মেলনে ফলাফল কারচুপির এই অভিযোগ করেন। এসময় তিনি সভাপতি পদে ঘোষিত ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন দেয়ারও দাবি জানান। গতকাল সোমবার ২১ জুন চকরিয়া উপজেলা সদরস্থ সমিতির কার্যালয় সকাল থেকে শুরু হয়ে বিকালে ভোট গননা শেষে ফলাফল ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশন।

সভাপতি প্রার্থী পৌর কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিব দাবি করেন, ঘোষিত ফলাফল সীটে সহ-সভাপতি পদে বিজয়ী প্রার্থী মৌলভী জাফর আলম মাছ প্রতীকে পেয়েছেন ২১০ ভোট। একই পদে নিকতটম হওয়া প্রার্থী আলহাজ আক্তার আহমদ বাই সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২০৪ ভোট। ফলাফল সীটে দুইজনের প্রয়োগকৃত ভোটের পরিমাণ সর্বমোট ৪১৪ ভোট বলে দেখানো হয়েছে।

একইভাবে ফলাফল সীচে সভাপতি পদে বিজয়ী নুরুল আলম খেজুর গাছ প্রতীকে ১২৮ ভোট পেয়েছেন। নিকটতম প্রার্থী তিনি (অভিযোগকারী) মুজিবুল হক দোয়াত কলম প্রতীকে ১২৬ ভোট, অপর দুই প্রার্থী যথাক্রমে জমির উদ্দিন মেম্বার ছাতা প্রতীকে ৮৬ ভোট ও ডা.আনন্দ মোহন দে চেয়ার প্রতীকে ৬৫ ভোট পেয়েছেন বলে ফলাফল ঘোষনা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। সেই হিসেবে সভাপতি পদে চারজনের প্রয়োগকৃত ভোটের সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছে ৪০৫ ভোট।

সভাপতি প্রার্থী মুজিবুল হকের প্রশ্ন, সহসভাপতি পদে (বিজয়ী ও বিজিত প্রার্থী) দুইজনের প্রয়োগকৃত ভোটের সংখ্যা ৪১৪ দেখানো হলেও সভাপতি পদে চারজন প্রার্থীর প্রয়োগকৃত ভোট দেখানো হয়েছে ৪০৫ ভোট। অর্থাৎ সভাপতি ও সহসভাপতি দুইটি পদে প্রয়োগকৃত ভোটের তারতম্য রয়েছে আরো ৯ ভোট। ফলাফল সীটে অবশ্য নির্বাচন কমিশন ওই ৯টি ভোট কোথায় আছে হদিস দিতে পারেনি।

সভাপতি প্রার্থী পৌর কাউন্সিলর মুজিবুল হক অভিযোগ তুলেছেন, ফলাফল সীটে সন্ধান না পাওয়া প্রয়োগকৃত ওই ৯টি ভোট কারচুপির মাধ্যমে তাকে পরাজিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই ৯টি ভোট তিনি পেয়েছেন এবং তিনিই সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, প্রয়োগকৃত ওই ৯টি ভোটের হদিস দিতে হবে। নইলে কারচুপির এই ফলাফল বাতিল করে সভাপতি পদে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে তিনি আইন আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান। একইসঙ্গে তিনি কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল ঘোষনা করা ব্যালটসহ ভোটের বাক্স সমুহ উপজেলা প্রশাসনের কাছে জব্দ করার জন্য চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানান।

বিষয়টি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার (নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি) আলহাজ সেলিম উল্লাহ বলেন, ঘোষিত ফলাফল সীটে কোনধরনের কারচুপি হয়নি। প্রয়োগকৃত ভোট গননা শেষে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনা করা হয়েছে সবার সামনে।

তা হলে সভাপতি পদে প্রয়োগকৃত ৯টি ভোট কোথায় গেল প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কয়েকটি ভোট নষ্ট হওয়ায় বাতিল করা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি ভোট বাক্সে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে কোন ভোটার ব্যালট পেপারে সীল মেরে প্রার্থীকে দেখানো জন্য বাইরে নিয়ে গিয়ে আর বাক্সে ফেলেনি। তাতে কোন প্রার্থী সংক্ষুদ্ধ হলে এব্যাপারে অবশ্যই আপীল করতে পারবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বলেন, চিরিঙ্গা বহুমুখী সমবায় সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি আপনাদের (সাংবাদিক) কাছ থেকে শুনলাম। এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমার দপ্তর কিংবা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার কাছ থেকে কোন ধরণের অনুমতিও নেয়নি।

তিনি বলেন, নির্বাচনে যদি কোনধরণের অনিয়ম বা কারচুপির ঘটনা ঘটে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: